Pages

Thursday, August 25, 2022

পরিবেশ সম্পর্কিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন

 পরিবেশ সম্পর্কিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন


জানুয়ারি 26 : প্রজাতন্ত্র দিবস (ভারত) (Republic Day) [India]

জানুয়ারি 30 : শহিদ দিবস (ভারত); বিশ্ব কুষ্ঠ দুরীকরণ দিবস (Martyrs' Day) [India]; (World Leprosy Eradication Day)

ফেব্রুয়ারি 24 :বিশ্ব জলাভূমি দিবস (World Wetland Day)

ফেব্রুয়ারি 28 : জাতীয় বিজ্ঞান দিবস (National Science Day) 

মার্চ 3 : বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস (World Wildlife Day)

মার্চ 8 : আন্তর্জাতিক নারী দিবস; আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস (International Women's Day; International Literacy Day) 

মার্চ 14 : ইনটারন্যাশনাল ডে অব অ্যাকশন ফর রিভারস (International Day of Action for Rivers ) 

মার্চ 15 : বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস (World Disabled Day)

মার্চ 21: বিশ্ব অরণ্য দিবস; জাতি বৈষম্য দূরীকরণ আন্তর্জাতিক দিবস (World Forestry Day; International Day for the Elimination of Racial Discrimination)

মার্চ 21 : আন্তর্জাতিক বন দিবস (International Day of Forests)

মার্চ 22 : বিশ্ব জল দিবস (World Day for Water)

মার্চ 23 :বিশ্ব আবহাওয়া দিবস (World Meteorological Day)

মার্চ 24 : বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস (World TB Day)

মার্চ 5 : জাতীয় সমুদ্র দিবস (National Maritime Day).

 মার্চ 7 : বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস (World Health Day)

এপ্রিল 22 : বসুন্ধরা দিবস (Earth Day)

মে 1 : শ্রমিক দিবস -  আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস (Worker's Day — International Labour Day) 

মে 4 : কয়লাখনি শ্রমিক দিবস (Coal Miners' Day)

মে ৪ :বিশ্ব রেড ক্রুশ দিবস (World Red Cross Day)

মে 9 : বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস (World Thalassemia Day)

মে 15: আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস (International Day of the Family)

মে 22 : বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস (World Biodiversity Day/International Day for Biological Diversity

মে 31 : তামাক-বিরোধী দিবস (Anti-tobacco Day)

জুন 5 : বিশ্ব পরিবেশ দিবস (World Environment Day)

জুন ৪ : বিশ্ব সমুদ্র দিবস (World Ocean Day)

জুন 17 : বিশ্ব মরুভূমিকরণ ও খরা নিবারণ দিবস (World Day to Combat Desertification and Drought)

জুলাই 11 : বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস (World Population Day)

জুলাই 29 : আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস (International Tiger Day)

আগস্ট 6: হিরোশিমা দিবস (Hiroshima Day)

আগস্ট 10 : বিশ্ব জৈব জ্বালানি দিবস (World Biofuel Day); বিশ্ব সিংহ দিবস (World Lion Day)

আগস্ট 12 : বিশ্ব হস্তি দিবস (World Elephant Day) 

আগস্ট 15 : ভারতের স্বাধীনতা দিবস (Indian Independence Day)

সেপ্টেম্বর 5 : শিক্ষক দিবস ( Teachers' Day)

সেপ্টেম্বর ৪ : বিশ্ব সাক্ষরতা দিবস (World Literacy Day)

সেপ্টেম্বর 16 : বিশ্ব ওজোন দিবস (World Ozone Day)

সেপ্টেম্বর 21 : শূন্য নিঃসরণ দিবস (Zero Emission Day)

সেপ্টেম্বর 22 : বিশ্ব গণ্ডার দিবস (World Rhino Day)

অক্টোবর 1 : আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস (International Day for the Elderly)

অক্টোবর 3 : বিশ্ব হ্যাবিট্যাট দিবস (World Habitat Day)

অক্টোবর 4 : বিশ্ব প্রাণীবিকাশ দিবস (World Animal Welfare Day)

অক্টোবর 13 : আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ লাঘব দিবস (International Day for National Disaster
Reduction)

অক্টোবর 16 : বিশ্ব খাদ্য দিবস (World Food Day)

নভেম্বর 14 : শিশু দিবস; ডায়াবিটিস দিবস (Childerm's Day; Diabetes Day)

ডিসেম্বর 5 : বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস (World Soil Day)

ডিসেম্বর 10 : মানবাধিকার দিবস (Human Rights Day)

ডিসেম্বর 18 : সংখ্যালঘু শ্রেণির অধিকার দিবস (ভারতে এই দিনটি পালন করা হয়) (Minorities Rights Day - India)

ডিসেম্বর 23 : কিষাণ দিবস (Kisan Divas – Farmer's Day) 


Wednesday, August 24, 2022

পরিবেশ সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত পূর্ণনাম

পরিবেশ সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত নাম



ASI - Anthropological Survey of India

BIS - Bureau of Indian Standards

BSI - Botanical Survey of India

CEC - Cation Exchange Capacity

CITES - Convention on International Trade in Endangered Species of Fauna and Flora 

CPCB - Central Pollution Control Board

CPR - Common Property Resources

CRZ - Coastal Regulation Zone

ΕΙΑ - Environmental Impact Assessment 

ENSO - El Nino and Southern Oscillation

ΕΡΑ - Environmental Protection Agency

EVS -  Environmental Studies 

FAO - Food and Agriculture Organization

GSI - Geological Survey of India

HDI - Human Development Index

ICAR - Indian Council of Agricultural Research

IPCC - Intergovernmental Panel on Climate Change

IUCN - International Union for Conservation of Nature and Natural Resources

LULC - Land Use Land Cover

LUMP -  Land Use Management Plan

MAB - Man and Biosphere

MoEFCC - Union Ministry of Environment, Forest and Climate Change 

NEERI -  National Environment Engineering Research Institute 

NGO - Non-Governmental Organization

NLCB - National Land Use and Conservation Board

OECD - Organization for Economic Cooperation and Development

OPEC - Organisation of the Petroleum Exporting Countries

PPP - Public Private Partnership / Purchasing Power Parity

QC - Quality Control

RS-GIS -  Remote Sensing - Geographic Information System 

SPM - Suspended Particulate Matter

TERI - Tata Energy Research Institute

UNEP - United Nations Environment Programme

UNESCO - The United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization 

UNFCCC - United Nations Framework Convention of Climate Change

WEC - Wave Energy Converter

WECD - World Commission on Environment and Development

WHO - World Health Organization

ZSI - Zoological Survey of India.



Saturday, August 20, 2022

জলাভূমি// Wetlands



জলাভূমি// Wetlands



■ জলাভূমি বা ওয়েটল্যান্ড (Wetland) কাকে বলে?
 

= 1971 সালে ইরানে অনুষ্ঠিত রামসার সম্মেলনে জলাভূমির (Wetland) যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেই অনুসারে জলাভূমি হল প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম, স্থায়ী বা অস্থায়ী, বদ্ধ বা প্রবহমান, স্বাদু বা লোনা জলের জলাশয়। সমুদ্রের জলে যে জলাভূমি পুষ্ট হয় সেখানে ভাটার সময়ে গভীরতা থাকবে 6 মিটার। জলাভূমি ভূপৃষ্ঠের যে-কোনো জায়গায় থাকতে পারে। যেমন, নদী অববাহিকায়, সমুদ্রের উপকূলে, পাহাড়ের ঢালে, মরুভূমির মধ্যে ইত্যাদি।


জলাভূমির বৈশিষ্ট্য কী?

= ইরানের রামসার শহর। বিমান থেকে যেমন দেখায়।

(1) জলাভূমি অগভীর বা গভীর জলে পূর্ণ থাকে তবে সাধারণত বর্ষাকালে এখানে জলের পরিমাণ বাড়ে। ফলে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এবং জোয়ার ভাটার প্রভাবে জলাভূমি অঞ্চলে জলের গভীরতা ও স্থায়িত্বের তারতম্য হতে পারে।

(2) জলাভূমি খোলা বা আবদ্ধ হতে পারে। এখানে জলতল স্থির হয়ে থাকতে পারে বা ওঠানামা করতে পারে। জলাভূমিতে জল আবদ্ধ বা বহমান হতে পারে।

(3) জলাভূমি এলাকার মাটি, আশপাশের মাটির থেকে আলাদা হয়। কারণ জলাভূমির মাটিতে কাদা ও পাঁকের পরিমাণ বেশি।

(4) এখানে জলজ উদ্ভিদের প্রাচুর্য লক্ষ করা যায়। যেমন উত্থিত, ভাসমান, নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ। এছাড়া নদী মোহানা ও উপকূলীয় অঞ্চলের অনুকূল পরিবেশে মানগ্রোভ উদ্ভিদ ও কম অক্সিজেনে অভ্যস্ত উদ্ভিদও এখানে জন্মায়। 

(5) ভূপৃষ্ঠের ওপর যে-কোনো নীচু জায়গায়, যেখানে জল জমে থাকতে পারে, সেখানেই জলাভূমি সৃষ্টি হওয়া সম্ভব। তা প্লাবনভূমি, তৃণভূমি যাই হোক না কেন।

(6) জলাভূমির জল লবণাক্ত, কষা বা মিষ্টি স্বাদের হতে পারে।

(7) জলাভূমি যে-কোনো আয়তনের হতে পারে। অর্থাৎ কয়েক বর্গমিটার থেকে কয়েকশো বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত।

(8) মাটির নীচের জলস্তর (অর্থাৎ ভৌম জল) সাধারণত জলাভূমির খুব কাছাকাছি থাকে, ফলে অনেকক্ষেত্রেই মাটির নীচে জমে থাকা জল জলাভূমিতে জলের জোগান দেয়। আবার জলাভূমিও মাটির নীচে ভৌম জলস্তরে জলের জোগান দিয়ে প্রাকৃতিক জলভাণ্ডারকে পুষ্ট করে।

■ জলাভূমি কয় ধরনের ও কী কী?

= জলাভূমি প্রধানত তিন ধরনের যেমন— 

(1) সামুদ্রিক বা উপকূলীয় জলাভূমি, 

(2) স্থলভাগের অভ্যন্তরে অবস্থিত জলাভূমি, 

(3) মানুষের তৈরি কৃত্রিম জলাভূমি।

প্রধান প্রাকৃতিক জলাভূমি কোন্ ধরনের ও কী কী?

= প্রধান প্রাকৃতিক জলাভূমি সাত ধরনের যেমন -

(1) সামুদ্রিক জলাভূমি (যেমন কচ্ছ প্রণালী [Gulf of Kachchh])

(2) মোহানা সংলগ্ন জলাভূমি (যেমন সুন্দরবন, তামিলনাড়ুর পিচাভরম [Pitchavaram])

(3) অভ্যন্তরীণ জলাভূমি (যেমন মধ্যপ্রদেশের ভোজ জলাভূমি)

(4) উপকূলীয় জলাভূমি (যেমন কেরালার অষ্টমুদি, ওড়িশার ভিতরকণিকা জলাভূমি) 

(5) নদীসংলগ্ন জলাভূমি (যেমন পূর্ব কলকাতা জলাভূমি) 

(6) স্বাদুজলের জলাভূমি (যেমন মণিপুরের লোকটাক হ্রদ) 

(7) লবণাক্ত জলের জলাভূমি (যেমন রাজস্থানে সম্বর হ্রদ)

(৪) পার্বত্য এলাকার জলাভূমি (যেমন মানস সরোবর, জম্মু কাশ্মীরের সোমোরিরি এবং উলার)।


অর্থনৈতিক উপযোগিতার ভিত্তিতে জলাভূমি কয় ধরনের?

= অর্থনৈতিক উপযোগিতার ভিত্তিতে জলাভূমি তিন ধরনের যেমন -

(1) ডেরেলিক্ট (Derelict) অর্থাৎ মজে যাওয়া জলাভূমি। এর অর্থনৈতিক উপযোগিতা নেই। 

(2) সেমি-ডেরেলিক্ট (Semi-derelict) অর্থাৎ বিপন্ন জলাভূমি। প্রায় মজে এসেছে। এই জলাভূমি সংস্কার
করে ব্যবহারযোগ্য করা যায়।

(3) কালচারেবল (Culturable) অর্থাৎ অর্থনৈতিক ভাবে উৎপাদনশীল জলাভূমি। মাছ চাষ ও অন্যান্য অর্থকরী কাজে এই ধরনের জলাভূমি ব্যবহারের উপযুক্ত।

■ পরিবেশ রক্ষায় জলাভূমির গুরুত্ব বা তাৎপর্য কী?

* জলাভূমির প্রাকৃতিক গুরুত্ব :

(1) বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা ও বৃষ্টির পরে রাস্তাঘাটে জল দাঁড়ানোর সময় কম করার জন্য : বন্যার অতিরিক্ত জল বা ভারী বর্ষণের পরে দ্রুত জলনিকাশের জন্য জলাভূমিগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা দরকার। কারণ এখানেই বন্যা ও বৃষ্টির জল শেষ পর্যন্ত জমা হওয়ার সুযোগ পায়।

(2) ভূগর্ভস্থ জলের জোগান দেওয়ার জন্য : জলাভূমির জল চুঁইয়ে মাটির নীচে ধীরে ধীরে যত নামতে থাকে, ভূগর্ভে জলের সঞ্চয়ও তত বাড়ে। ভূগর্ভে জলের এই সঞ্চয় যাতে রক্ষা করা যায়, তার দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখা দরকার। নচেৎ চাষের জন্য সেচের জল, শহর এলাকায় ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানীয় জল পাওয়ার সম্ভাবনা আস্তে আস্তে কমবে।

(3) জলের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য : জলাভূমিতে যেসব জলজ উদ্ভিদ ও শৈবাল জন্মায়, তাদের মধ্যে অনেকেই জলে গুলে থাকা অর্থাৎ দ্রবীভূত হওয়া রাসায়নিক পদার্থগুলিকে শোধন করতে পারে। ফলে প্রায় বিনা খরচে জলাভূমির কল্যাণে প্রাকৃতিক উপায়ে জলশোধন হয়। এই কারণে জলাভূমিকে “প্রকৃতির কিডনি”, “শহর-নগরের কিডনি” (Natural Kidney, Urban Kidney) বলা হয়।

(4) জৈব বৈচিত্র্যকে রক্ষা করার জন্য : জলাভূমির মধ্যে বেঁচে থাকা জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ ছাড়াও পরিযায়ী পাখিরা আসে ৷ জলাভূমি নষ্ট করলে ছোটো শৈবাল থেকে বড়ো বড়ো পাখি, মাছ ও অন্যান্য সরীসৃপের প্রাণ সংশয় হবে এবং বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হবে।

(5) সামুদ্রিক ঝড়, তুফান থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ও উপকূলের ক্ষয় রোধ করার জন্য : উপকূল সংলগ্ন এলাকায় বড়ো বড়ো জলাভূমি থাকলে সমুদ্রের ঝড়, তুফান সরাসরি জনবসতির ওপর আছড়ে পড়তে পারে না। জলাভূমির বিস্তার এবং জলাভূমিকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠা বনভূমি এই ঝড়, তুফানের তীব্রতা কমিয়ে দেয়। ফলে একদিকে যেমন বড়ো বড়ো ঢেউগুলি জলাভূমির মধ্যেই ভেঙে যায়, তেমনি অন্যদিকে উপকূলের জমিও ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পায়।

(6) জলবায়ুর পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য : বিশ্ব উষ্ণায়নের হার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জলাভূমি দরকার। কারণ জলাভূমি ও জলাভূমির উদ্ভিদ CO, শোষণ করে প্রকৃতিকে গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাব থেকে কিছুটা মুক্ত করে। 

(7) প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য : জলাভূমি পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। জলাভূমির নিজস্ব একটি নান্দনিক আকর্ষণ আছে।

জলাভূমির অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব :

(1) মাছ চাষের মাধ্যমে জীবিকার সুযোগ তৈরি করার জন্য ও বাজারে মাছের চাহিদা মেটানোর জন্য জলাভূমির গুরুত্ব আছে।

(2) পদ্ম, শালুক, পানিফল প্রভৃতি অর্থকরী ফসলকে লাভজনকভাবে চাষ করার জন্য জলাভূমি রক্ষা করা জরুরি।

(3) ইকো-ট্যুরিজমের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হলে জলাভূমিগুলিকে কেন্দ্র করে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়।

(4) ঘন জনবসতি এলাকায় প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম যে-কোনো ধরনের জলাশয়কে রক্ষা করার দরকার আছে কারণ জলাশয়ের জল দমকল ব্যবহার করতে পারে, জলাশয়ের চারপাশে বাগান, পার্ক, প্রাতঃভ্রমণের রাস্তা, বসার ও বিশ্রামের জায়গা তৈরি করে নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য বাড়ানো যায়। 

রামসার সাইট বা রামসার ক্ষেত্র কাকে বলে?

1971 সালে UNESCO-র আগ্রহে রামসার সম্মেলনে (Ramsar Convention) বিশ্বের যে গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমিগুলিকে চিহ্নিত করা হয়, তাদের রামসার সাইট (Ramsar site) বা রামসার ক্ষেত্র বলে। 

রামসার সম্মেলনের গুরুত্ব কী ?

রামসার সম্মেলনে (Ramsar Convention) বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমিগুলির সংরক্ষণ, জলের সুস্থায়ী ব্যবহার, বেআইনি দখলদারী (encroachment) বন্ধ করা ও জলাভূমিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য রামসার চুক্তি হয়। এখানে উল্লেখ্য যে রামসার চুক্তি হল একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। তবে চুক্তি লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেই।

মনত্রু রেকর্ডস কী?

মনত্রু রেকর্ডস (Montreux Records) হল রামসার লিস্ট-এর অন্তর্গত বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ জলাশয়গুলির তালিকা, যে জলাশয়গুলিতে দূষণ, মানুষের হস্তক্ষেপ, শিল্পায়ন, নগরায়ণ বা অন্য কোনো কারণে পরিবেশগত পরিবর্তন ঘটেছে, ঘটে চলেছে এবং আগামী দিনে ওই ধরনের পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন— ওড়িশার চিলিকা হ্রদ।

জলাভূমির সমস্যা কি?

(1) জলাভূমিতে কৃষিজমি, কলকারখানা, ঘর-গৃহস্থালির রাবিশ, আবর্জনা, দূষিত জল ও বর্জ্য, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ফেলা হয় বা জলপ্রবাহের সঙ্গে এসে মেশে। ফলে জলাভূমি দূষিত হয়।

(2) জলাভূমি বুঝিয়ে চড়া দামে জমি বিক্রি করার কাজ চলে। নগরায়নের ও শিল্পায়নের জন্য জমির চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যেই এই বেআইনি কাজ চলছে।

(3) ইউট্রোফিকেশনের কারণে জলাভূমি বুজে নষ্ট হয়। পলি অবক্ষেপণের কারণেও জলাভূমির বিনাশ ঘটে।

পরিবেশ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ও কাজ // Instruments and their works related to environment


পরিবেশ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ও কাজ 

(1) কারেন্ট মিটার - নদীতে জলের গতিবেগ মাপার জন্য 

(2) pH মিটার - জল ও মাটির অম্লতার পরিমাপ 

(3) সাউন্ড লেভেল মিটার - শব্দদূষণ মাপার কাজ

(4) ইকো সাউন্ডার - জলের গভীরতা মাপার কাজ

(5) BOD মিটার - জলের BOD মাপার কাজ

(6) টারবিডিটি মিটার - জলের ঘোলাটে ভাব মাপার জন্য 

(7) ফোর্টিন্‌স ব্যারোমিটার - বায়ুর চাপ মাপার কাজ

(৪) অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার - বায়ুর চাপ মাপার কাজ, বায়ুর চাপের সাহায্যে কোনো স্থানের উচ্চতা 
মাপার কাজ

(9) ম্যাকসিমাম-মিনিমাম থার্মোমিটার - সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাপার জন্য 

(10) হাইগ্রোমিটার - বায়ুর আর্দ্রতার পরিমাপ 

(11) GPS যন্ত্র - মানচিত্রে কোনো স্থানের অবস্থান জানার জন্য ও অচেনা জায়গায় পথ দেখানোর জন্য, জরিপ করার কাজে

(12) অল্টিমিটার - সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভূমির উচ্চতা মাপার কাজ

(13) অ্যানিমোমিটার - বায়ুর গতিবেগ মাপার কাজ

(14) বাত পতাকা বা উইন্ড ভেন - বায়ুপ্রবাহের দিক জানার জন্য 

(15) উইভ টারবাইন - বাতশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য 

(16) সোলার PV সৌরকোশ - সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য

(17) টাইডাল এনার্জি কনভারটার - জোয়ার-ভাটার শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য

(18) OTEC - সমুদ্র জলের তাপমাত্রার পার্থক্যকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য 

(19) স্ফিগমোম্যানোমিটার - রক্তচাপ মাপার জন্য 

(20) গ্লুকোজ মিটার - রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষার কাজ 

(21) রেনগেজ - বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাপার কাজ

(22) সুনামিটার - সমুদ্রে সুনামি সৃষ্টি হয়েছে কিনা জানার জন্য

(23) DART - সুনামির পূর্বাভাস দেওয়া

(24) BPR - সমুদ্রের নীচে জলের চাপের পার্থক্য মাপার জন্য






Sunday, August 14, 2022

দেশান্তর বা প্রচরণ বা পরিব্রাজন বা মাইগ্রেসন (Migration) // Transhumance


দেশান্তর বা প্রচরণ বা পরিব্রাজন বা মাইগ্রেসন (Migration)




■ দেশান্তর বা পরিব্রাজন বা মাইগ্রেসন কী?

দেশান্তর বা পরিব্রাজন বা মাইগ্রেসন (migration) হল কোনো জায়গায় বহুদিন বা স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে মানুষের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আসা ও যাওয়ার প্রক্রিয়া। দেশান্তরের আরও একটি বাংলা প্রতিশব্দ হল “প্রচরণ”।

জনবসতির ভিত্তিতে দেশান্তর বা মাইগ্রেসন কয়প্রকার?

- জনবসতির ভিত্তিতে দেশান্তর বা মাইগ্রেসন বা পরিব্রাজন চার ধরনের, যেমন – (1) গ্রাম থেকে শহরে, (2) গ্রাম থেকে গ্রামে, (3) শহর থেকে গ্রামে ও (4) শহর থেকে শহরে।

ভৌগোলিক সীমানার ভিত্তিতে প্রচরণ বা দেশান্তর বা মাইগ্রেসন কয় ধরনের?

ভৌগোলিক সীমানার ভিত্তিতে দেশান্তর বা মাইগ্রেসন দুধরনের, যেমন— (1) অন্তর্দেশীয় প্রচরণ বা আন্তঃরাজ্য প্রচরণ (Internal migration) এবং (2) আন্তর্জাতিক প্রচরণ (International migration)। 

অভিবাসন বা ইমিগ্রেসন কী?

কোনো বিদেশি নাগরিক বা নাগরিকবৃন্দ যখন কোনো একটি দেশে বসবাস করার উদ্দেশ্যে চলে আসেন, তখন সেই দেশের সাপেক্ষে অন্তর্মুখী পরিব্রাজনকে অভিবাসন বা ইমিগ্রেসন (Immigration) বলে। 

প্রবাসন বা এমিগ্রেসন কী?

কোনো দেশের কিছু নাগরিক যখন অন্য কোনো দেশে বসবাসের উদ্দেশ্যে চলে যান, তখন এই বহির্মুখী পরিব্রাজনকে প্রবাসন বা এমিগ্রেসন (Emigration) বলে।

কী কারণে প্রচরণ বা মাইগ্রেসন ঘটে?

বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে প্রচরণ বা মাইগ্রেসন ঘটে, যেমন— (1) যেখানে আয়ের সুযোগ বেশি, কাজের পরিবেশ ভালো, মানুষ সেখানে চলে যেতে চায়। (2) বিবাহের কারণে সাধারণত মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। (3) উচ্চশিক্ষার জন্য বহু ছেলেমেয়ে বড়ো শহরে বা বিদেশে পাড়ি দেয়। (4) দাঙ্গা, দেশভাগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভৃতির কারণে প্রচুর মানুষ দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

 “ব্রেন ড্রেন” কী?

উন্নতিশীল দেশের মেধাবী মানুষ, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, প্রযুক্তিবিদ প্রভৃতি দক্ষ মানুষ যখন উন্নত দেশগুলিতে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ ও স্বচ্ছল জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করেন, তখন উন্নতিশীল দেশের সাপেক্ষে এই বহির্মুখী দেশান্তর হল “ব্রেন ড্রেন” (Brain drain)। ভারতে ব্রেন-ড্রেন এর সমস্যা আছে। 

“ব্রেন গেন” কী?

উন্নত দেশগুলিতে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ ও স্বচ্ছল জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে যখন উন্নতিশীল দেশের মেধাবী মানুষ, দক্ষ বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, প্রযুক্তিবিদ চলে আসেন, তখন উন্নতদেশের সাপেক্ষে এই অন্তর্মুখী প্রচরণকে “ব্রেন গেন” (Brain gain) বলে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে ব্রেন গেন ঘটে। 

“ট্রান্সহিউম্যান্স” কী?

পশুপালক যাযাবরী মানুষদের গোরু, ভেড়া, ইয়াক প্রভৃতি পশুর পালসহ শীতকালে পাহাড়ের নীচে নেমে আসা এবং গ্রীষ্মের শুরুতে পশুচারণের উদ্দেশ্যে পাহাড়ের ওপরের দিকে অবস্থিত তৃণভূমিতে উঠে যাওয়ার এই ঋতুভিত্তিক পরিব্রাজনকে “ট্রান্সহিউম্যান্স” (Transhumance) বলে। উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, লে-লাদাখ অঞ্চলের বহু পশুপালক মানুষ ট্রান্সহিউম্যান্‌স-এ অংশ নেয়।




Saturday, August 13, 2022

বনহনন (Deforestation) সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর


বনহনন (Deforestation) সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর


১) বনহনন কী?

= প্রধানত মানুষ তার বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক চাহিদা মেটানোর জন্য নির্বিচারে বনভূমির কাঠ দীর্ঘ দিন ধরে কেটে নিলে অরণ্যের বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশের যে ক্ষতি হয় তাকে বনহনন বা অরণ্যের  ধ্বংসসাধন (Deforestation) বলে।

২) বনহননের কারণ কী?

= পৃথিবীব্যাপী বনভূমির আয়তন ক্রমশ কমে যাওয়ার কারণগুলিকে দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করা যায়, যেমন— (1) প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে বনভূমির বিনাশ এবং (2) আর্থ-সামাজিক কারণে অরণ্যের বিলুপ্তি। 

(1) প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে বনভূমির বিনাশঃ 

(a) দাবানল : দাবানল বনভূমি বিনষ্ট করে। দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া প্রভৃতি মহাদেশের ব্যাপক বনভূমি দাবানলের কবলে স্থায়ীভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। সম্প্রতি (2019) ব্রাজিলের আমাজন অববাহিকায় ব্যাপক দাবানলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। দাবানল প্রভাবিত  অঞ্চলগুলিতে নতুন বনভূমি সৃষ্টির জন্য বৃহদায়তনে বৃক্ষ রোপণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

(b) সামুদ্রিক ঝড় : টাইফুন, সুনামি (Tsunami), টর্নেডো প্রভৃতি ভয়ংকর ঝড় প্রতিবছর বহু হেক্টর বনভূমি ধ্বংস করে।

(c) ধস : পাহাড়ি অঞ্চলে ধসের ফলে সরলবর্গীয় ও মিশ্র বনভূমির অন্তর্গত অরণ্য প্রতিবছর নষ্ট হয়। অতিবৃষ্টি, ভূমিকম্প ইত্যাদি নানা কারণে ধস হতে পারে। 2015-তে নেপালে, 1950 সালে অসম (আসাম) ভূমিকম্পের কারণে হিমালয়ের বিস্তৃত অঞ্চলে প্রচুর বনভূমির ক্ষতি হয়।

(d) অ্যাসিড বৃষ্টি : বিশ্বের শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চলগুলির আশপাশে সালফিউরিক অ্যাসিড বৃষ্টির ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া, বর্জ্য, রাসায়নিক দ্রব্য ইত্যাদি জলীয় বাষ্পের সঙ্গে মিশে অ্যাসিড বৃষ্টি ঘটায়। এর ফলে বনাঞ্চলের ক্ষতি হয়।

(e) অগ্ন্যুৎপাত : অগ্ন্যুৎপাতের আঞ্চলিক ঘটনা সেই অঞ্চলে বনভূমি ধ্বংসের জন্য দায়ী। উদাহরণ হিসেবে ভারতে ব্যারেন দ্বীপের সাম্প্রতিক অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে।

(২) আর্থ-সামাজিক কারণে অরণ্যের অবলুপ্তি : 

FAO, 2015 সালে বনভূমির আয়তন-সংক্রান্ত যে তথ্য প্রকাশ করে তার ভিত্তিতে দেখা যায় যে, এই সময়ে পৃথিবীতে মোট বনভূমির পরিমাণ ছিল 399 কোটি হেক্টর, 2000 সালে 408.5 কোটি হেক্টর এবং 1990 সালে 416.8 কোটি হেক্টর। অর্থাৎ বিগত 25 বছরে প্রায় 17.8 কোটি হেক্টর জমি থেকে অরণ্য চিরকালের মতো হারিয়ে গেছে। 

(a) কৃষিজমির ক্রমবর্ধমান চাহিদা ঃ 

FAO-এর হিসেব অনুসারে, প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে গড়ে প্রায় 25 লক্ষ হেক্টর জমি চাষ-আবাদের আওতায় আনা হয়। এই জমির প্রায় সবটাই বনভূমিকে ধ্বংস করে আহরণ করা হয়ে থাকে।

(b) মানুষের আর্থ-সামাজিক লক্ষ্যে পৌঁছোনোর তাগিদ : মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতির পথ প্রশস্ত করতে দরকার শিল্প, যাতায়াত-যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামোগত সুবিধা। সেজন্য দরকার প্রচুর সস্তা জমি, যা বনভূমি ধ্বংস করে সহজেই পাওয়া যায়।

(c) বাসস্থানের চাহিদা : সাম্প্রতিককালে পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় 10 কোটি লোক বাড়ছে । যার অধিকাংশই এশিয়া ও আফ্রিকার বিকাশশীল দেশগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য ন্যূনতম বাসস্থানটুকু জোগান দিতে হলে প্রতি বছরে কয়েকশত বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বসতি স্থাপনের প্রয়োজন হয়, এবং সে-কারণেও বনভূমি ক্রমশ অবলুপ্ত হয়ে চলেছে।

(d) জ্বালানির চাহিদা : পৃথিবীর বিকাশশীল দেশগুলিতে জ্বালানির অতিরিক্ত দাম অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। ফলে দরিদ্র জনসাধারণ জ্বালানির জন্য বনের গাছপালার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে এবং বনভূমি ধ্বংস হয়।

(e) স্থানান্তরী কৃষির প্রভাব : পৃথিবীর উপজাতি অধ্যুষিত অধিকাংশ অঞ্চলে একস্থান থেকে অন্যস্থানে বিচরণশীল যাযাবরী ধরনের স্থানান্তরী কৃষির প্রচলন দেখা যায়। উত্তর-পূর্ব ভারতে এ-ধরনের কৃষিকাজ জুম চাষ নামে পরিচিত। অপরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে বনভূমি ধ্বংস করে, জুম চাষের জমি আহরণ করা হয়।

(f) অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণ : দানাশস্যের চাহিদা যেমন জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে চলেছে, তেমনি দুধ, ঘি, মাখন, পনির, মাংস, পশম, চামড়ার চাহিদাও একইভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পশুচারণের পরিধি বিস্তৃত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বনভূমির আয়তনও দ্রুতগতিতে হ্রাস পাচ্ছে।

(g) কাষ্ঠশিল্পের প্রয়োজনে কাঠের চাহিদা : মানুষের নানাকাজে কাঠের চাহিদা বাড়ছে বলে বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে।

(h) অরণ্যের যথেচ্ছ ব্যবহার : মানুষের অদূরদর্শিতা ও লোভের কারণে কচি, শিশু, অপরিণত গাছ যেমন নির্বিচারে মারা পড়ছে, একইভাবে পরিণত গাছও অপরিকল্পিতভাবে কেটে নেওয়া হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অসম ও উত্তরবঙ্গের বিশাল অরণ্যভূমি এই ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।

৩) বর্নভূমি ধ্বংস হলে পরিবেশের কী সমস্যা  হয়? 

=বনভূমি বিলুপ্ত হওয়ার সঙ্গে জড়িত সমস্যাগুলি হল-

(1) ভূমিক্ষয়ের ফলে জমির উর্বরতা হ্রাস : ওয়ার্লড ওয়াচ ইন্সটিটিউটের (World Watch Institute) মতে পৃথিবীতে গড়ে প্রতি বছর প্রায় 7700 কোটি টন মাটি ক্ষয় হচ্ছে। মাটিকে উর্বরতা জোগায় যে পুষ্টিমৌলগুলি (nutrients), যেমন – নাইট্রোজেন, ফসফরাস, সালফার, পটাশিয়াম, লোহা, তামা, দস্তা, আয়োডিন ইত্যাদি সেগুলিও একইসঙ্গে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে। ফলে জমি রিক্ত হয়ে উঠছে। অনুর্বর জমিকে চাষযোগ্য করার সমস্যা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। মাটির এই ব্যাপক ক্ষয়ের পেছনে রয়েছে অপরিকল্পিতভাবে গাছপালা কেটে ফেলার অদূরদর্শী কাজ।

(2) বন্যা ও খরার প্রকোপ বৃদ্ধি : বনভূমি বিনষ্ট হলে নদীখাতে অতিরিক্ত পলি জমা হয়। ফলে নদীর গভীরতা কমে যায়। বর্ষার উদ্বৃত্ত জল, তখন নদীর পক্ষে আর বহন করা সম্ভব হয় না। নদীতে বন্যা দেখা দেয়। অন্যদিকে বনভূমি বাতাসে যে জলীয় বাষ্প জোগান দেয়, বনভূমি ধ্বংস হলে, সেই জোগান ব্যাহত হয়, বৃষ্টির পরিমাণ কমে যায়, খরা দেখা দেয়।

(3) মরুভূমির প্রসার : বায়ু ও মাটিতে গাছপালা যে আর্দ্রভাব বজায় রাখে, গাছপালার ঘনত্ব হ্রাস পেলে সেই আর্দ্রতা কমে যায়। মরুসংলগ্ন অঞ্চলে স্বাভাবিকভাবেই মরুভূমির আয়তন প্রসারিত
হয় বা অন্যান্য জায়গায় অনাবৃষ্টির প্রভাবে মরুসদৃশ অবস্থার (desertification) সৃষ্টি হয়। প্রসঙ্গত, ভারতের পরিবেশ মন্ত্রক United Nations Convention to Combat Desertification-কে মরুকরণ সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছে, তার ভিত্তিতে লক্ষ করা যায় যে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশের বেশি এলাকা মরুকরণ—জমির অবক্ষয়—খরা (DLDD অর্থাৎ Desertification—Land Degradation-Drought)-র সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছে।

(4) বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি ও পৃথিবীর তাপীয় ফলের পরিবর্তন: বনভূমি ধ্বংস হলে বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে সারা পৃথিবী জুড়ে উষ্ণায়ন (global warming) ও জলবায়ু পরিবর্তনের (climate change) সমস্যা বাড়ে।

(5) পাহাড়ি অঞ্চলে ধসজনিত সমস্যা বৃদ্ধি পায়। কারণ বনভূমির অভাবে মাটি উদ্ভিজ্জের সুরক্ষা হারায়।

(6) পতিত জমির পরিমাণ বাড়ে। কেননা বনভূমি না থাকলে মাটিতে পুষ্টিমৌলের জোগান কমে।            

(7) জীববৈচিত্র্য (biodiversity) ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ বনভূমি হল অসংখ্য কীট-পতঙ্গ- পাখি-সরীসৃপের আবাস স্থল।                                          

(8) চেরাই কাঠের (sawn wood) জোগান কমে। কেননা বনভূমিই হল কাঠের আদি ও অকৃত্রিম উৎস। 

(9) প্লাস্টিক, পলিথিন-জাতীয় জৈব-পচনবিমুখ (non-biodegradable) পদার্থের ব্যবহার বাড়ে। ফলে বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রতিকূল প্রভাব পড়ে।          

(10) পরিবেশ দূষণের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। কারণ বনভূমির দূষণ নিরোধক ব্যবস্থা বনহননের সঙ্গে সঙ্গে বিনষ্ট হয়।

৪) বনসম্পদ সংরক্ষণ করার উপায় কী বা বনভূমির হ্রাস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়গুলি কী কী ? 

= বনসম্পদ সংরক্ষণ করা ও বনভূমির হ্রাস নিয়ন্ত্রণ করার প্রধান উপায়গুলি হল—

(1) বনসৃজন : চিরাচরিত বা উন্নত পদ্ধতিতে বনভূমি সৃষ্টি করে, বৃক্ষরোপণ করে বনসম্পদের জোগান অব্যাহত রাখা যায়। যেমন— যৌথ বন ব্যবস্থাপনা (Joint Forest Management) পদ্ধতি, কৃষি বনসৃজন, সামাজিক বনসৃজন পদ্ধতি।

(2) নিয়ন্ত্রিত পশুচারণ : ছাগল, মেষপ্রভৃতি চারণ করানোর জন্য পশুচারণ ক্ষেত্র নির্দিষ্ট করা দরকার।  

(3) উপযুক্ত ভূমি ব্যবহার ব্যবস্থার প্রবর্তন : জমির অবস্থান, মাটির চরিত্র এবং জমির অন্যান্য বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী জমিকে পরিকল্পনা অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করে, জমির ব্যবহার (Land use) নির্দিষ্ট করা দরকার।

(4) পতিত জমিতে বনসৃজন : এই পদ্ধতিতে শুধু যে জমির উপযোগিতা বৃদ্ধি পায় তাই নয়, পতিত জমি (Wasteland) থেকে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ানো যায়। জমির অর্থনৈতিক মান উন্নত হয়।

(5) কীটপতঙ্গ এবং রোগ নিবারণ : কীটপতঙ্গের আক্রমণে প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে বনভূমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। উদ্ভিজ্জের সুরক্ষার জন্য কীটপতঙ্গ, রোগ প্রতিহত করা দরকার।

(6) হ্যাবিট্যাট সংরক্ষণ ও খাদ্যের জোগান : সংরক্ষিত বনভূমি, অভয়ারণ্য, মৃগদাব প্রভৃতি গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশ-বিদেশে উদ্ভিজ্জ ও অরণ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

(7) সুলভ পরিবেশবান্ধব জ্বালানির বন্দোবস্ত : সুলভ ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির বন্দোবস্ত করে বিকাশশীল দেশগুলিতে জনসাধারণকে কাঠের মতো সহজ সস্তা জ্বালানি ব্যবহার করা থেকে বিরত করা যায়। ফলে বনভূমি ধ্বংস হওয়ার হার কমে।

(৪) উপযুক্ত তত্ত্বাবধান : বনভূমি সংরক্ষণের কাজ সঠিকভাবে তত্ত্বাবধান করা দরকার। এ ব্যাপারে পুলিশ, প্রশাসন ও বনরক্ষকদের মধ্যে সঠিক সংযোগ গড়ে তোলা প্রয়োজন।

(9) কাঠের বিকল্পের সন্ধান : উপযুক্ত বিকল্প ছাড়া কাঠের ব্যবহার কিছুতেই কমানো যায় না। সুতরাং কাঠের কার্যকর বিকল্প চাই যা উপভোক্তা ও পরিবেশ উপযোগী হবে।

(10) অপচয় কমানো ও নিয়ন্ত্রিতভাবে কাঠ কাটা : কাঠ ও কাঠজাত সম্পদের অপচয় নিবারণ করে স্বাভাবিক উদ্ভিজ্জ ও বনভূমিকে ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে বাঁচানো যায়।

(11) দাবানল নিয়ন্ত্রণ : দাবানলের মতো ব্যাপক প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ করে বনভূমি সংরক্ষণ করা যায়। এ কাজে মহাকাশে স্থাপিত হওয়া কৃত্রিম উপগ্রহগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

৫) কৃষি বনসৃজন বা Agro-Forestry কাকে বলে?

= FAO-এর মত অনুসারে কৃষকের নিজের অধিকারভুক্ত কৃষি বা পতিত জমিতে কৃষিফসল উৎপাদনের পাশাপাশি কাঠ, সবুজ সার, ওষুধ, ছায়া, ফলমূল ইত্যাদি আহরণের জন্য গাছপালা লাগিয়ে যে বনভূমি গড়ে তোলা হয়, তাকে কৃষি-বনসৃজন বা কৃষি অরণ্য বা অ্যাগ্রো ফরেস্ট্রি (Agro-Forestry) বলে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক উৎপাদক থেকে সংগঠকে পরিণত হয়।

৬) কৃষি বনসৃজনের সুবিধা কী কী?

= কৃষি বনসৃজনের মাধ্যমে যে সমস্ত প্রাকৃতিক ও আর্থ-সামাজিক অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা যায় বা যে সমস্ত সুবিধা ভোগ করা যায়, সেগুলি হল—

(1) অব্যবহৃত, পতিত, পরিত্যক্ত ও সাধারণভাবে চাষবাসের অনুকূল নয় এমন জমিকে অর্থনৈতিকভাবে পুনরুদ্ধার করা যায়, উৎপাদনশীল করা যায়।

(2) ভূমিক্ষয় নিবারণ করা যায়।

(3) কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায়। কারণ কৃষি ফসল ছাড়াও ফলমূল, কাঠ ইত্যাদি বিক্রির মাধ্যমে কৃষকের আয় বাড়ানোর সুযোগ হয়।

(4) ছদ্ম বেকারত্ব কমে। কৃষকের পরিবারভুক্ত লোকজনের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।

(5) জমিতে জৈব সারের পরিমাণ বাড়ে।

(6) জমিতে অন্যান্য সুষম পুষ্টিমৌল সরবরাহের পরিমাণ বাড়ে।

(7) জ্বালানির প্রয়োজন মেটে।

(৪) নিজের প্রয়োজনমতো কাঠ কৃষক নিজেই উৎপাদন করতে সমর্থ হয়।

(9) বাজারে কাঠের জোগান বাড়ে। ফলে একদিকে কাঠের দাম
কাঠের জন্য বনভূমি ধ্বংস করার প্রবণতা কমে।
নাগালের মধ্যে থাকে এবং অন্যদিকে

(10) ভেষজ গাছগাছড়ার জোগান বৃদ্ধি পায়। ওষুধ শিল্পে কাঁচামালের অভাব কমে।                              

(11) পশুখাদ্যের জোগান বৃদ্ধি পায়।

(12) দূষণ প্রতিরোধ করা যায়।

(13) প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষিত হয়।

৭) কৃষি বনসৃজনের অসুবিধা কী কী?

(1) কৃষি বনভূমি গড়ে তোলার জন্য অনেক সময় লাগে (long gestation period)। ফলে কৃষকের তাৎক্ষণিক লাভের সুযোগ কম।

(2) অনেকের মতে ইউক্যালিপটাস জাতীয় গাছ মাটির রস বেশি মাত্রায় শোষণ করে নেয়। ফলে মাটি রুক্ষ হয়ে পড়ে।

(3) সঠিক প্রজাতির গাছ বাছাই করা না হলে, জমি ছায়াঘন হয়ে পড়ে। সে কারণে স্বাভাবিক কৃষিকাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

(4) কৃষি বনসৃজনের জন্য উদ্ভিদের কোনো বিদেশি (exotic) প্রজাতি রোপণ করা হলে, স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে তার অভিযোজন নাও হতে পারে। ওই নতুন উদ্ভিদকে আশ্রয় করে ক্ষতিকর পোকার (pest) আমদানি হতে পারে।

৮) কৃষি বনসৃজনের প্রকৃতি কী?

কৃষি বনসৃজন বহু উদ্দেশ্যসাধক (multipurpose) প্রকল্প। বনভূমিকে রক্ষা করা, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা, কৃষকের আয় বৃদ্ধি করা, সম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা সংযোজন করা ইত্যাদি নানা সুবিধার কথা ভেবেই, কৃষি বনসৃজন প্রকল্পের শুরু। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক শুধু অপরের ভোগের জন্য সামগ্রী উৎপাদন করে না। কৃষক নিজে সংগঠকের (entrepreneur) ভূমিকাও পালন করে।

৯) কৃষি বনসৃজনের উপযুক্ত জায়গা কী কী?

= কৃষিজমির আল, আইল বা ঘের বরাবর কৃষি বনভূমি সৃজন করা যায়। চা বাগানের মধ্যে ছায়া প্রদায়ী গাছ লাগানো যায়। এ ছাড়া, পতিত জমি বা বাড়ির সীমানা বরাবর বা বাড়ির পেছনের ফাঁকা জমিতেও কৃষি-বনসৃজন করা যায়।

১০) কৃষি বনসৃজনের উপযুক্ত গাছগুলি কী কী?

জমির অবস্থান অনুসারে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো যায়, যেমন,

(1) জমির বিস্তৃত আল, ঘের বা বাঁধ বরাবর সুবাবুল, ইউক্যালিপটাস, সোনাঝুরি, আকাশমণি, নিম, সুপারি, তাল প্রভৃতি।

(2) বাগানে কলা, লেবু, কুল, কাঁঠাল, আম, নারকেল, জাম, ফলসা, চালতা ইত্যাদি।

(3) পতিত জমিতে নিম, কদম, সোনাঝুরি, শাল, মেহগিনি, শিশু জাতীয় বড়ো গাছ বা বিভিন্ন ধরনের ডাল যেমন মসুর, অড়হর বা বাদাম, ভুট্টা ইত্যাদি শস্য।

(4) কৃষিজমির কাছাকাছি বা সবজি বাগানে ধঞ্চে গাছ।

(5) বাড়ির সীমানা বরাবর সুপারি, সাবু, তাল, ইউক্যালিপটাস, শিশু, আকাশমণি প্রভৃতি।

(6) পুকুরের ধারে নারকেল, তাল, সুপারি, চালতা, আম, ফলসা প্রভৃতি।

(7) সুবিধামতো জায়গায় বাসক, নয়নতারা, কালমেঘ প্রভৃতি।

(8) চা, কফি, কোকো বাগানে শিরীষ, কৃষ্ণচূড়া, কলা, ভুট্টা ইত্যাদি।

 ১১) সামাজিক বনসৃজন বা সোস্যাল ফরেস্ট্রি কাকে বলে?

= সামাজিক বৃক্ষরোপণ পরিকল্পনা অনুসারে নানা ধরনের অব্যবহৃত ও পতিত জমিতে অরণ্য সৃষ্টির উদ্যোগকে সামাজিক বনসৃজন বা সোস্যাল ফরেস্ট্রি (Social Forestry) বলে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ, অর্থনীতি ও মানুষ উপকৃত হয়।

১২)  সামাজিক বনসৃজনের সুবিধাগুলি কী কী?

= (1) সামাজিক বনসৃজনের মাধ্যমে অব্যবহৃত, পরিত্যক্ত ও পতিত জমি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক পদ্ধতিতে ব্যবহার করা যায়। ফলে জমির অর্থনৈতিক উপযোগিতা বৃদ্ধি পায়।                                          

(2) অতিরিক্ত বনভূমি সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে ভূমিক্ষয়জনিত সমস্যা নিবারণ করা যায়।                              

(3) জ্বালানির জোগান বৃদ্ধি করা যায়।                                                                                               

(4) কৃষি, বনায়ন, পশুচারণ ও অন্যান্য উপজাত সামগ্রী উৎপাদনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা যায়।  

(5) পশুখাদ্যের জোগান বৃদ্ধি করা যায়।                                                                                            

(6) স্থানীয় জনগণের আয় ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে।                                                                                

(7) স্থানীয় লোকজনের মধ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।

(৪) কাঠ ও অন্যান্য বনজাত দ্রব্যের জোগান বৃদ্ধি পায়।                                                                    

(9) ফলমূল উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে দেশে খাদ্য পরিস্থিতি অনুকূল হয়।

(10) ঝড়ঝঞ্ঝাজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক সুরক্ষা বলয় (shelter-belts) ও শহরাঞ্চলে নগর বনায়ন (urban forestry) গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

(11) অতিরিক্ত গাছের পাতা খাদ্য হিসেবে জোগানের মাধ্যমে নিবিড় পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।      

(12) বিভিন্ন ধরনের গাছপালার সমন্বয়ে সুন্দর, মনোরম নিসর্গ (landscape) সৃষ্টি করা সম্ভব হয়।      

(13) বাড়িঘর নির্মাণ, কৃষি যন্ত্রপাতি, গোরুর গাড়ি ও গ্রামীণ যানবাহন নির্মাণ, এমনকি বেড়া দেওয়ার জন্যও সস্তায় কাঠ সরবরাহ করা যায়।                                                                                             

(14) গাছপালার সঙ্গে মানুষের নিকট সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে গাছপালা লাগানোর অভ্যাস তৈরি হতে পারে।

 ১৩) সামাজিক বনসৃজনের উপযুক্ত স্থানগুলি কী কী? 

= সামাজিক বনসৃজনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট স্থান নেই। উদ্ভিদের বেঁচে থাকার মতো যে-কোনো গাছ লাগানো যায়। তবে এ ধরনের বন বা বাগান করার জন্য যে ধরনের জায়গা সাধারণত বেছে হয়, সেগুলি হল—

(1) রেললাইনের দুপাশের জমি ও রাস্তার দুপাশের ফাঁকা জমি।

(2) খালের ধার বরাবর ফাঁকা জমি।

(3) প্রান্তিক ও প্রায় প্রান্তিক (marginal and sub-marginal) ধরনের কৃষিজমি।      

(4) নিম্নমানের প্রায় পরিত্যক্ত বনভূমি।                                                       

(5) শহরের বিভিন্ন জায়গায়, ফুটপাতের ধার, রাস্তার মধ্যবর্তী বিভাজিকা (median) বরাবর।                  

(6) শিল্পাঞ্চলের মধ্যবর্তী পছন্দসই ফাঁকা জায়গা।                                                                              

(7) বাড়ির পেছনের ফাঁকা জমি।                           

(8) কৃষিজমির আল, ঘের, বাঁধ বরাবর।                      

(9) ভূমিক্ষয় জর্জরিত খোয়াই, বেহড় বা র‍্যাভাইন (ravine) অঞ্চলে।                                               

(10) মরুভূমির আশপাশে।                                   

(11) স্কুল, কলেজ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ মন্দির, মসজিদ, গির্জা প্রভৃতির উন্মুক্ত চত্বরে।                                           

(12) কবরস্থান, শ্মশানঘাটে।                               

(13) নদীর পাড় বা সমুদ্রের তীর বরাবর।             

(14) পুকুর বা বড়ো জলাশয়ের ধার বরাবর।         

(15) চা, কফি, কোকো বাগানে।






উপগ্রহ চিত্র ও ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র/ Satellite Image and Topographical Map

উপগ্রহ চিত্র ও ভূ-বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র Satellite Image and Topographical Map ১. TCC - এর পুরো নাম কি? = True Colour Composite। ২. FCC - এ...